অ্যালোভেরা জেল এর উপকারিতা: প্রিয় ভিউয়ার্স আপনাদের সকলের উদ্দেশ্যে আমাদের ওয়েবসাইটে আজকে নিয়ে এসেছি গুরুত্বপূর্ণ একটি নিবন্ধ। আমাদের আজকের এই নিবন্ধটি হচ্ছে এলোভেরা জেল এর উপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কিত একটি নিবন্ধ। আমরা আজকের এই নিবন্ধটিতে আপনাদের মাঝে এলোভেরা জেল এর উপকারিতা ও অ্যালোভেরা জেল এর ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কিত সকল ধরনের তথ্য সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছি। অ্যালোভেরা একটি ঔষধি গুনাগুন সম্পূর্ণ উদ্ভিদ। এটি প্রসাধনী ও বিভিন্ন রকম ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। অনেকেই আবার একে ঘরোয়া ভাবে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকে। অ্যালোভেরার তৈরিকৃত জেল চুলের গুনাগুন বৃদ্ধিতে সহায়ক। অ্যালোভেরার এই গুনাগুনের কারণে অনেকেই চুলে এলোভেরার জেল ব্যবহার করে থাকেন। অনেক সময় তারা এই জেল ব্যবহারের সঠিক নিয়মকানুন ও উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের আজকের এই পোস্টটিতে আমরা এলোভেরা জেল এর উপকারিতা ও ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কিত তথ্যগুলো তুলে ধরেছি। আশা করি আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের কাজে লাগবে।
অ্যালোভেরা একটি ছোট্ট উদ্ভিদ। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে উপকার করে থাকে। অ্যালোভেরা ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন একটি উদ্ভিদ। এর পত্রটি বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এবং মেয়েদের সকল ধরনের প্রসাধনী তৈরিতে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হয়। এলোভেরা জেল হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা অ্যালোভেরার তৈরীকৃত জেল চুলের গুনাগুন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই জেল ব্যবহারের মাধ্যমে চুল পড়া রোধ হয় চুল সিল্কি হয় এবং চুলের ফাটা রোধ করা সম্ভব। অ্যালোভেরা জেল চুলকে শক্তিশালী ও মজবুত করতে সাহায্য করে থাকে। শুধুমাত্র এলোভেরা জেল তৈরিতে ব্যবহার করা হয় না বরং ঘরোয়া ভাবে রূপচর্চা করার ক্ষেত্রেও অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হয়। অ্যালোভেরার পাতার ভেতরের আঠালো অংশটি ত্বককে মসৃণ করে তুলতে সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন ধরনের উপাদানের মাধ্যমে ত্বকের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ব্যবহার করা হয়। অনেকেই আবার বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে এলোভেরার কাণ্ড কিংবা পাতা সেবন করে থাকেন। এটি মানুষের জীবনে একটি উপকারী উদ্ভিদ।
আরও পড়ুন: চুল পড়া বন্ধ ও নতুন চুল গজানোর উপায়
অ্যালোভেরা জেল এর উপকারিতা
বর্তমান সময়ে প্রতিটি মানুষ এলোভেরা জেল চুলে ব্যবহার করে থাকে। তবে অনেকেই এর উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানে না যার কারণে তারা বিভিন্ন জায়গায় এলোভেরা জেলের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তাদের জন্য আমরা আজকে আমাদের ওয়েব সাইটে নিয়ে এসেছি অ্যালোভেরা জেল এর উপকারিতা সম্পর্কিত সকল তথ্য। আপনারা আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে এলোভেরা জেল এর উপকারিতা গুলো জানতে পারবেন। আমাদের আজকের এই পোস্ট থেকে এলোভেরা জেল এর উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে ধারণা নিয়ে আপনি আপনার পরিচিত সকলকে অ্যালোভেরা জেল এর উপকারিতা গুলো জানাতে পারবেন এবং চুলের গুনাগুন বৃদ্ধিতে এলোভেরা জেল ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারবেন। নিচে এলোভেরা জেল এর উপকারিতা গুলো তুলে ধরা হলো:
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে
ছোটখাটো কাটা-পোড়া, অ্যালার্জি, ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি সারাতে অ্যালোভেরা খুব কার্যকর। অ্যালোভেরা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। আর আর্দ্র ত্বকে যে বলিরেখা পড়ে না, সে তো সবাই জানেন। সরাসরি পাতা থেকে জেলটা নিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যালোভেরা জেল, মধু, দুধ, হলুদ অথবা সামান্য দুধের সর মিশিয়ে মুখে মাস্কের মতো লাগালে ব্রণ তাড়াতেও দারুণ কাজ করে। রোদে পোড়া ত্বকে অ্যালোভেরা, শসার রস আর দইয়ের মিশ্রণ লাগালে ত্বকের উপকার হয়।
ওজন কমাতে অ্যালোভেরা
দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করবে অ্যালোভেরা। এর মধ্যে প্রচুর ভিটামিন আর মিনারেল থাকে। থাকে অ্যামাইনো অ্যাসিড, এনজাইম আর স্টেরল। তাই নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খেলে সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
অ্যালোভেরার জুস খানিকটা তিতা। তাই ব্লেন্ডারে শাঁস, পানি, বরফ দিয়ে জুস করে সামান্য মধু আর লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাওয়া যায়।
চুল পড়া কমাতে
অ্যালোভেরার জুসে প্রোটিয়োলাইটিক এনজাইমস নামে এক ধরনের উৎসেচক থাকে, যা তালুর ত্বকের কোষগুলোর স্বাস্থ্যরক্ষায় বিশেষভাবে কার্যকর। নিয়মিত ব্যবহার করলে বাড়বে চুলের দৈর্ঘ্য, কমে যাবে খুশকি, মাথার তালুর ইনফেকশন। এটি কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করবে এবং চুল থাকবে নরম ও মোলায়েম।
রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়
বহু যুগ ধরে ডায়াবেটিসের প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ব্যবহার হয়েছে অ্যালোভেরার জুস। বলা হয়, এই পানীয় নিয়মিত সেবন করলে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ে, রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করাটা সহজ হয়ে আসে।
কোষ্ঠকাঠিন্যতে উপকার করে
অ্যালোভেরার পাতার নিচের দিকে চটচটে হলুদ রঙের আঠালো একটি পদার্থ মেলে, এই উপাদানটি কোষ্ঠকাঠিন্যের ওষুধ হিসেবে দারুণ কার্যকর। তবে পাচনতন্ত্রের অন্য কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারবে না এটা। তাই এই সমস্যায় অ্যালোভেরা নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম
চুলের গুণগত মান বজায় রাখতে এলোভেরা জেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু এখনো অনেকে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের সঠিক নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানে না। তাইতো তারা অনলাইনে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। তাদের জন্য আমরা আজকে এ পোস্টটিতে নিয়ে এসেছি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম কানুন সম্পর্কিত সকল তথ্য। আপনারা আমাদের আজকের এই পোস্টটি সংগ্রহ করলে অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার পদ্ধতি জানতে পারবেন। আপনাদের সকলের সুবিধার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম গুলো সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের আজকের এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করলে আপনি নিজেই অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানতে পারবেন এবং আপনার পরিবার পরিজন ও বন্ধুদের জানাতে পারবেন। নিচে এলোভেরা জেল ব্যবহারের নিয়ম গুলো তুলে ধরা হলো:
(১) শুষ্ক ত্বকের যত্নের কসমেটিক্স এ অ্যালোভেরা থাকে কারণ এটি ত্বককে সজীব করে যা আপনিও বাসায় করতে পারেন। ছুরি দিয়ে অ্যালোভেরার ভিতরের জেল বের করে মুখের ত্বকে লাগালে ত্বক মসৃণ , উজ্জ্বল আর নরম হবে।
(২) বয়সের বাড়ার সাথে আমাদের চামড়ায় ভাজ পড়ে যা আপনি সহজেই রুখতে পারেন এই অ্যালোভেরা ব্যবহার করে কারণ এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান সমৃদ্ধ। এই জেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে এবং এর ভিটামিন এ, বি, সি ও এ উপাদান ত্বকের পুষ্টি যোগায়। রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখতে এটি ব্যবহার করা হয়। ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল আর অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে এই মাস্ক সান বার্ন হয়ে যাওয়া ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
(৩) অ্যালোভেরা দিয়ে ত্বকের মৃত কোষ দূর করার মাস্ক তৈরি করার জন্য আপনার লাগবে ১ চা চামচ ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল যা ব্লেন্ড করে নিন।
এরপর এক চা চামচ ওটমিলের গুড়া আর ১/২ চা চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাস্কটি মুখে আর গলায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখবেন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন । সপ্তাহে ১ বার এটি ব্যবহার করুন।
(৪) অ্যালোভেরার প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান একনে সারাতে আর নুতন কোষ জন্মাতে কার্যকর। অ্যালোভেরার জেল আইস কিউব ট্রেতে করে অ্যালোভেরার আইস কিউব তৈরি করে এই কিউব দিনে দু তিনবার আপনার একনেতে ঘষলে একনের সমস্যা কমে যাবে।
(৫) ত্বকের পাশাপাশি চুলের জন্য অ্যালোভেরা অনেক দরকারি। অ্যালোভেরার ব্যবহারে মাথার ত্বকের পি এইচ ঠিক থাকে আর খুশকিও দূর হয়। ২ঃ ১ অনুপাতে অ্যালোভেরা জেল আর ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে সারা রাত রেখে সকালে শ্যাম্পু করতে হবে। চুল খুশকি মুক্ত থাকবে।
(৬) ঠোঁট এর রঙ উজ্জ্বল রাখতে ঠোঁট নরম আর মসৃণ করতে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ঠোঁটে লাগলেই ঠোঁট উজ্জ্বল হবে। এক টেবিল চামচ চালের গুঁড়া আর অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে আস্তে আস্তে এই মিশ্রণ ঠোঁটে লাগিয়ে ৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। দেখুন ঠোঁট কত উজ্জ্বল, মসৃণ এবং কোমল হয়ে ওঠে।
(৭) অ্যালোভেরার অ্যান্টিসেপটিক গুনাগুনও উল্লেখযোগ্য। অ্যালোভেরার পাতার জেল বের ফ্রিজে রাখুন আর অল্প কেটে গেলে বা ক্ষত হলে লাগান। দিনে দুই বা তিন বার লাগালেই ক্ষত আরাম হবে।