Web 3.0 কি

Web 3.0 কি? ওয়েব 3.0 সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

Web 3.0 কি: পৃথিবীতে যত ডেটা সেন্টার রয়েছে। সেখানে ইন্টারনেট ইউজারদের ডেটা সংরক্ষিত রয়েছে। সেগুলোর ৫০% ডেটা সংরক্ষণ রয়েছে Amazon, Google এবং Microsoft এর ডেটা সেন্টারে। সমস্যাটা এখানেই, যেহেতু তাদের কাছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সকল ডেটা স্টোরেজ করা রয়েছে। এখন তারা সে সকল ডেটা দিয়ে যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে থার্ড পার্টির ক্ষেত্রে ইউজারের ডেটা বিক্রির মত ঘটনা শোনা যায়। এর দ্বারা কোম্পানিগুলো প্রচুর অর্থ উপার্জন করে থাকে। ধরুন, আপনি MB ক্রয় করে বন্ধুদের সাথে তোলা ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করছেন। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়াগুলো আপনার ব্যক্তিগত ডেটা কালেক্ট করে অর্থ আয় করছে।

Web 3.0 কি
Web 3.0 কি?

 জেনে অবাক হবেন, গুগল ২০১৯ সালে প্রতিটি ইউজার থেকে গড়ে ৩৬.২$ ইনকাম করেছে। যা টাকায় কনভার্ট করলে দাড়ায় ৩০৭৭৳। অন্যদিকে ২০২১ সালে ফেসবুক তার ইউজার থেকে গড় প্রতি ৪০.৯৬$ ইনকাম করেছে যা টাকায় কনভার্ট করলে দাড়ায় ৩৪৮১৳। ফেসবুক সহ গুগলের সার্ভিসগুলো ইউজার যদিও ফ্রিতে ব্যবহার করে থাকেন। তবে, Ads দেখানোর মাধ্যমে কোম্পানিগুলো ইউজার থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে থাকে। পুরো ইন্টারনেটের ৩৪% ব্যবহৃত হয় Google, Facebook, Netflix, Amazon, Microsoft, YouTube, Apple ব্যবহার করতে।

web 3.0 কি?

Web 3.0 এটি একটি Decentralized Internet যেখানে একজন ইউজার তার ডেটা কন্ট্রোল করতে পারবে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তার অনলাইন প্রেজেন্সকে ১০০% কন্ট্রোল করতে পারবে। সে সময় বড় বড় কর্পোরেশন যেমন: Facebook, Youtune ইত্যাদির কোনো অস্তিত্বই থাকবে না। Google, Facebook, Youtube এর বদলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নিজেই নিজের ডেটা বিক্রি করে অর্থ আয় করতে পারবে। এক্ষেত্রে কম্পিউটার নিজেই ইনফরমেশন তৈরি করতে পারবে। অনেকগুলো ডিভাইস একটি আরেকটির সাথে কানেক্টেড থাকবে। ধরুন, আপনি অফিস থেকে বাসায় আসছেন । বাসায় কাছাকাছি আসা মাত্রই আপনার মোবাইল থেকে সিগন্যাল চলে যাবে আপনার এসির কাছে, লাইটের কাছে। আপনি বাড়িতে প্রবেশ করার সাথে সাথে দেখবেন এসি, লাইট ইত্যাদি অন হয়ে আছে। প্রতিটি ডিভাইসের সাথে একটি করে সেন্সর লাগানো থাকে। যার সাহায্যে ডেটা কালেক্ট করা হয়।

Web 3.0 এর মূল আকর্ষণ হচ্ছে Decentralization যেহেতু, Web 3.0 এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই এর কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। তবে, এর বিভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন: Semantic Web, TranscendentWeb, Web of Things ইত্যাদি। ২০১৬ সালে এটিকে Web 3.0 নামকরণ করা হয়। Web 3.0 তে কোনো কোম্পানি যদি তার ইউজারদের ডেটা কোনো থার্ড পার্টির কাছে বিক্রি করে তাহলে, ইউজার সেটি জানতে পারবে। ইউজার তার ডেটা শেয়ারিং যে কোনো সময় বন্ধ করে দিতে পারবে। Web 2.0 তে বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন।

web 2.0 যা আমরা এই মূহূর্তে ব্যবহার করছি। এখানে আমাদের ইনফরমেশনগুলো একটি সার্ভারে স্টোরেজ থাকে। web 3.0 এর ক্ষেত্রে আমাদের ডেটাগুলো অনেকগুলো সার্ভারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে। আমাদের যত রকমের Computer source ডিভাইস রয়েছে। যেমন: ল্যাপটপ, মোবাইল, গাড়ি, এসি ইত্যাদি এই সবগুলো একত্রিত যেই ডেটা জেনারেট করবে। সেটি একজন গ্রাহক বিক্রি করতে পারবে। web 2.0 এর যাত্রা শুরু হয় ২০০৫ থেকে। web 2.0 এর পূর্বে ছিল Web 1.0 Web 1.0 এর অস্তিত্ব ছিল ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত। এটি ছিল সে সময়ের নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট। web 1.0 থেকে ওয়েবসাইটে থাকা প্রবন্ধ শুধু পড়া যেত। মতামত প্রদান, লাইক, কমেন্ট, একাউন্ট তৈরি, লগইন-এর সুবিধা ছিল না।

Web 1.0 এবং Web 2.0 এর মাঝে পার্থক্য:

Web 1.0 তে ধরুন, আপনি একজন সাইট ওনার। আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্রবন্ধ লিখতে পারবেন। অন্যদিকে পাঠক কেবল মাত্র আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রবন্ধগুলো পড়তে পারবে। অন্যদিকে Web 2.0 এর বিষয়টি সম্পূর্ণে ভিন্ন। এখানে ইউজার একটি ওয়েবসাইটে কনটেন্ট আপলোড করতে পারে। যেমন: ইউটিউব। Youtube কর্তৃপক্ষ ভিডিও আপলোড করে না। ইউজাররাই ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে থাকে। ইউটিউবের নিজস্ব কনটেন্ট নেই। সেখানে Web 2.0 তে যেখানে আমরা কনটেন্ট দিচ্ছি। যেখানে Web 3.0 নিজ থেকে কনটেন্ট দিবে আমাদের সুবিধার্থে। ইউজারের চাহিদা মত কনটেন্ট সহজেই বের করে দিতে পারবে।

শেষ কথা: পরিশেষে বলতে চাই Web 3.0 সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এছাড়া আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে ব্যক্তিগত মতামত থাকে তাহলে আমাকে জানাতে পারেন। আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আর্টিকেল এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করার চেষ্টা করে থাকি। আপনাদের যদি কোন তথ্য সম্পর্কে জানার থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনাকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *