সূরা ইউসুফ

সূরা ইউসুফ: আয়াত ২৮ এর উচ্চারণ, অনুবাদ ও সংশ্লিষ্ট ঘটনা

সূরা ইউসুফ কুরআনুল কারীমের ১২ নাম্বার সূরা। যা আল্লাহ তা’য়ালা তার প্রিয় বান্দা ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা:) এর উপর অবতীর্ণ করেছেন। সূরা ইউসুফে নবী ইউসুফ (আ.) এর পুরো জীবনী বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। কুরআনুল কারীমে অন্য কোনো নবী সম্পর্কে একটা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয় নি।

সূরা ইউসুফ
সূরা ইউসুফ: আয়াত ২৮ এর বাংলা উচ্চারণ, অনুবাদ ও সংশ্লিষ্ট ঘটনা

সূরা ইউসুফ: আয়াত ২৮

সূরা ইউসুফ আয়াত ২৮ এর অনুবাদ এবং আয়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট ঘটনা তুলে ধরব। আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারীমের সূরা ইউসুফ আয়াত ২৮ এ বলেন:

فَلَمَّا رَأَىٰ قَمِيصَهُ قُدَّ مِن دُبُرٍ قَالَ إِنَّهُ مِن كَيْدِكُنَّ ۖ إِنَّ كَيْدَكُنَّ عَظِيمٌ

বাংলা উচ্চারণ: ফালাম্মা রাআ কামীসাহূ কুদ্দা মিন দুবরিন ক্বলা ইন্নাহূ মিন কাইদিকুন্ন ইন্না কাইদাকুন্না ‘আজীম।

বাংলা অনুবাদ: অতঃপর যখন (জুলাইখার) স্বামী দেখল তার (ইউসুফ আ:-এর) জামা পিছন দিকে ছিঁড়েছে। তখন সে বলল: নিশ্চয়ই এটা তোমাদের নারীদের ছলনা। নিশ্চয় তোমাদের ছলনা মারাত্মক।

সূরা ইউসুফ আয়াত ২৮ সংশ্লিষ্ট ঘটনা

উক্ত আয়াতে হযরত ইউসুফ আ. এর চারিত্রিক পবিত্রতা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি কোনো প্রকাশ অশ্লীল কাজে লিপ্ত হন নি। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারীমে আয়াত নাজিল করেন। মূল ঘটনাটি হল:

ইউসুফ (আ.) ছিলেন একজন সুদর্শন যুবক। ছোটবেলায় তাঁর ভাইয়েরা ষড়যন্ত্র করে গোলাম বানিয়ে বিক্রি করে দেয়। এক পর্যায়ে আজিজে মিশর তাঁকে ক্রয় করে। তিনি আজিজে মিশরের অধীনস্থ হন। এবং জীবনের দীর্ঘ সময় আজিজে মিশরের অধীনস্থতায় কাটান।

এ দিকে আজিজে মিশরের স্ত্রী জুলাইখা হযরত ইউসুফ (আ.) এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। বিষয়টি এ পর্যায়ে চলে যায় যে, জুলাইখা ইউসুফ আ. কে কুকর্মের প্রস্তাব দেন। কিন্তু জুলাইখা হযরত ইউসুফ (আ.) কে কোনো ক্রমেই কুকর্মে লিপ্ত করাতে পারছিলেন না।

তাই ইউসুফ আ. কে নিজের সাথে কুকর্মে লিপ্ত হতে একটি ফন্দি আঁটে। জুলাইখা প্রাসাদের যে কক্ষে থাকতেন। তাতে প্রবেশ করতে ৮টি দরজা অতিক্রম করতে হত। প্রতিটি দরজা অধিক সুরক্ষিত ছিল। ইউসুফ আ. কে অশ্লীল কাজে জড়াতে নিজ কক্ষে নিয়ে আসেন এবং প্রতিটি দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। যেন ইউসুফ আ. কোনো ক্রমেই ঘর থেকে বাহির হতে না পারে।

আরো পড়ুন: ফজরের নামাজ কয় রাকাত ও কিভাবে পড়তে হয়

জুলাইখা ইউসুফ আ. কে অশ্লীল কাজে উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। ইউসুফ আ. জুলাইখার কুমন্ত্রণা থেকে নিজের চরিত্রকে রক্ষা করার জন্য কক্ষ থেকে দৌড়ে পালান। জুলাইখাও ইউসুফ আ.এর পিছনে দৌড়ান। ইউসুফ আ. যখন দৌড়ানো আরম্ভ করেন। তখন আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে সকল দরজার তালা খুলে যায়।

আজিজে মিশর জুলাইখার কক্ষ হতে ইউসুফকে এভাবে দৌড়ে বের হতে দেখে বিব্রত হন। দৌড়ানোর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জুলাইখা ইউসুফ আ’ এর ব্যাপারে চারিত্রিক মিথ্যা অপবাদ দিতে আরম্ভ করে। বিষয়টির সঠিক ফায়সালার জন্য আজিজে মিশর বিচারক নিযুক্ত করেন।

আরো পড়ুন: মাগরিবের নামাজ কত রাকাত ও আদায় করার নিয়ম

বিচারক রায় দেন, যার পরিহিত কাপড়ের পিছনের দিকে ছেড়েছে সে নির্দোষ। তালাশ করে দেখা গেল, ইউসুফ আ. এর জামার পিছনের দিকে ছেড়েছে। তখন আজিজে মিশরের বুঝতে বাকি রইল না যে, প্রকৃত অপরাধী তার স্ত্রীই। তখন আজিজে মিশর তার স্ত্রীকে সম্বোধন করে বলেছিল: নিশ্চয়ই এটা তোমাদের নারীদের ছলনা। নিশ্চয় তোমাদের ছলনা মারাত্মক।


দৈনন্দিন জীবনে ইসলামী সমাধান খুঁজে পেতে ভিজিট করুন আলকাউসার.কম


এটিই মূলত সূরা ইউসুফ আয়াত ২৮ এর সাথে সম্পৃক্ত ঘটনা। যা আজও দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। সকল নবীগণ নিষ্পাপ ছিলেন। উনারা কখনো শরীয়ত গর্হিত কোনো কাজ করতেন না। বরং শরীয়ত সীমারেখার ভেতরে সর্বদা থাকতেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *