হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল: আপনার হাতে লেখা কি দেখতে অসুন্দর? আপনি কি ঠিক সময়ে ভালো লেখা লিখতে পারেন না? আপনি ঠিক জায়গায় চলে এসেছেন। তো আজকে আমরা আলোচনা করব লেখা সুন্দর করার উপায়। লেখা নিয়ে ছোটবেলায় আমরা একটি বিষয় সম্পর্কে সবাই জেনেছিলাম যে যার লেখা সুন্দর সে কিন্তু পরীক্ষায় অধিক নাম্বার পায়। তবে বিষয়টি সম্পর্কে প্রায় সকলেরই ধারণা থেকে থাকবে।
আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় গুলো হলো কি কি বিষয় গুলো আপনি মেনে চললে আপনার লেখা প্রতিনিয়ত ভালোর দিকে এগিয়ে নিতে পারবেন। তো অনেক সময় দেখা যায় আমরা আমাদের হ্যান্ডরাইটিং গুলো ভালো করতে পারি না। যার জন্য নানারকম বিষয়ে আমাদের খারাপ কিছু সাথে মোকাবেলা করতে হয়।
যাদের হ্যান্ডরাইটিং ভালো তারা কিন্তু পরীক্ষা থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেকটি জায়গায় অনেক রকম সুবিধা পেয়ে থাকে। তাহলে চলুন তাদের সুবিধা গুলো সম্পর্কে একটু জেনে নেই তাদের সুবিধা গুলো সম্পর্কে যদি আপনি জানেন তাহলে কিন্তু লেখা ভালো করার জন্য আপনার মনে আরেকটু প্রবণতা বেড়ে যাবে। তাহলে চলুন দেখে নেই কি কি সুবিধা পাচ্ছে লেখাগুলো ভালো।
আপনার লেখা যদি সুন্দর এবং স্পষ্ট হয় তাহলে কিন্তু সেগুলো পড়তে খুবই খুবই ভাল লাগবে। আপনার লেখাগুলো যদি স্পষ্ট এবং সুন্দর হয় তাহলে কিন্তু যে ব্যক্তি পড়বে তার মনে আকৃষ্ট করে ফেলবে এবং সেগুলোর জন্য আপনার পুরো লেখাটি পড়তে ইচ্ছা করেবে। হাতের লেখা সুন্দর হলে সেই লেখাগুলো পড়তে অনেকেরই স্বচ্ছন্দ বোধ হয় এবং খুব স্পষ্টভাবেই লেখাগুলো পড়া যায়।
আপনার হাতের লেখা যদি সুন্দর হয় তাহলে আপনার সব জায়গায় আলাদা একটি সুবিধা পেয়ে থাকবেন। অনেক সময় আপনার সুন্দর হাতের লেখা দিয়ে কিন্তু আপনি নানারকম আর্ট করতে পারেন। এই আর্ট গুলো পরবর্তীতে আপনার ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করবে।
শিক্ষামূলক ফেসবুক স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, উক্তি ও কিছু কথা
হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল
ইতিমধ্যে আপনারা হয়তো বা হাতের লেখা সুন্দর থাকলে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যায় সেগুলো পড়ে নিয়েছেন এবং আপনার মনে এই বিষয়ে অনেক আশা রয়েছে যে আপনার হাতের লেখা গুলো ভালো হবে। আপনিও সেই সুবিধাগুলো পাবেন।
তো এখন আমরা আলোচনা করব কি কি কৌশলগুলো মেনে চললে আপনারা অবশ্যই আপনার হাতের লেখা গুলোকে অতীতের তুলনায় একটু হলেও সুন্দর করে তুলতে পারবেন। আর আপনি যদি এটিকে প্রতিনিয়ত মানেন তাহলে একটু না আপনি পুরোটাই সুন্দর করতে পারবেন।
লেখা সুন্দর করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র
লেখা সুন্দর করার গেলে প্রথম যে বিষয়টি আপনাকে দেখতে হবে সে বিষয়টি হলো আপনার লেখার প্রতি একটা আকর্ষণ থাকতে হবে। এজন্য লেখার প্রয়োজনীয় সামগ্রী গুলো রয়েছে সেগুলো আপনাকে ভালোমতো কিনতে হবে।
লিখতে গেলে অবশ্যই আপনাকে একটি কলম লাগবে এজন্য আপনাকে যে বিষয়টি নির্ধারণ করতে হবে সেটি হল আপনাকে প্রথমে একটি সুন্দর কলম নির্ধারণ করতে হবে।
আর হ্যাঁ একটি বিষয় সম্পর্কে আপনাদের মাঝে বলে নেই আপনি যে কলমটি সিলেক্ট করবেন আপনি পরবর্তীতে চেষ্টা করবেন শুধুমাত্র সেই কলমটি দিয়ে লিখতে। কেননা আপনারা জানেন যে কোন একটি বিষয়ের উপর আপনার যদি অনেকদিন ধরে সম্পর্ক থাকে তাহলে কিন্তু সেই জিনিসটি সকল বিষয়ে আপনারা খুব সহজে বুঝতে পারেন। সেটি ব্যবহারে আপনার আর অসুবিধা হবার কথা না এজন্য সঠিক কলম নির্বাচন করুন এবং চেষ্টা করুন একই কলম দিয়ে লেখার।
ধীর স্থির ভাবে লেখার চেষ্টা করুন
লিখতে গেলে অবশ্যই আমাদের ধীর-স্থিরভাবে লেখার চেষ্টা করতে হবে। অনেক সময় আমরা দেখা যায় পরীক্ষার হলে বা অন্য হোমওয়ার্ক বা প্রাইভেট পরীক্ষায় আমরা লেখার সময় আমাদের স্পিড বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। একটি বিষয় আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে আপনার লেখা সুন্দর করতে গেলে আপনার লেখা গুলোকে ধীর-স্থিরভাবে লিখতে হবে। কেননা যে কোন কাজ খুব তাড়াতাড়ি করতে গেলে কিন্তু কাজটি ভালো হয় না।
এজন্য ধীর-স্থিরভাবে লেখার চেষ্টা করুন। যেকোন সময় আপনি যদি লিখতে চান তাহলে একটি সময় নির্ধারণ করে লেখার চেষ্টা করুন। আমরা অনেক সময় দেখে থাকি আমরা লেখার সময় তাড়াহুড়ো করে ফেলি যখন আপনি লিখতে বসবেন আর তাড়াহুড়ো করে ফেলবেন এমনিতেই তো আপনার লেখা খারাপ তার উপরে যদি আপনি তাড়াহুড়া করেন তাহলে বুঝতেই পারছেন লেখার অবস্থা কেমন হবে।
এজন্য আপনাকে প্রথমত একটি সময় নির্ধারণ করতে হবে ধরুন আপনি একটি প্যারাগ্রাফ লিখবেন আপনার হাতে নির্দিষ্ট সময়ে 10 মিনিট যখন আপনি আপনার লেখা সুন্দর করতে যাবেন তখন সেই সময় দিকে বাড়িয়ে নেবেন। কেননা ধীর স্থির ভাবে লিখলে লেখাগুলো সুন্দর হওয়ার একটি সম্ভাবনা থাকে।
প্রতিনিয়ত অনুশীলন করুন
একটি বিষয় সম্পর্কিত আমরা সবাই অবহিত আছি যে অনুশীলন ছাড়া কোনো জিনিসই ভালো হয় না। হয়তো আপনারা এই বিষয়ে সম্পর্কে জানেন তো লেখার বিষয়টিও ঠিক একই রকম আপনি যে কাজই করেন না কেন আপনাকে প্রতিনিয়ত অনুশীলন করতে হবে।
লেখার কর্মক্ষমতা বাড়াতে এজন্য লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিনিয়ত অনুশীলন করতে হবে। অনুশীলন ছাড়া আপনারা কখনোই ভালো লিখতে পারবেন না।
অনুশীলনের জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট সময় বেছে নিতে হবে ধরুন আপনি দিনে আপনার হাতের লেখা সুন্দর করার জন্য 30 মিনিট বেছে নিলেন। আপনাকে প্রতিনিয়ত এই 30 মিনিট আপনার হাতের লেখা সুন্দর করার চেষ্টা করতে হবে। আপনাকে কোন না কোন বিষয়ে লিখতে হবে এই বিষয়টির দিকে আপনি আরও লক্ষ রাখতে পারেন আপনার হাতের লেখার জন্য প্রতি দিন অনুশীলন করতে থাকুন।
নির্দিষ্ট স্থানে বসে লিখুন
প্রত্যেকটি বিষয়ের একটি করে নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে যেগুলোতে বসে আমরা সেই কাজটি করি। আপনি পড়াশোনা করবেন সেটা তো আপনার পড়াশোনার টেবিল রয়েছে ঠিক তেমনিভাবে যখন আপনি লেখবেন তখন একটি নির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করুন।
তো পড়াশুনা আর লেখার জন্য আমরা যে বিষয়টি নির্ধারণ করবেন সেটি হল পড়ার টেবিল আপনি যখন লিখবেন তখন আপনার পড়ার টেবিলে আর অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই নানারকম জায়গায় লিখে তো আপনি যদি আপনার জায়গাটি নির্ধারণ করতে না পারেন তাহলে কিন্তু আপনার লেখা সুন্দর হবে না। এজন্য আপনাকে যে বিষয়টি লক্ষ্য করতে হবে সেটি হল নির্দিষ্ট এবং আপনার জন্য ভালো হয় এমন জায়গা নির্ধারণ করুন।
স্পেশাল টিপসঃ উপরোক্ত টিপসগুলো ছাড়াও নিচের কয়েকটি টিপস আপনাদের জন্য দিয়ে রাখলাম লেখা সুন্দর করার জন্য। যখন আপনি লিখবেন তখন আপনার বইয়ের লেখা গুলো অনুসরন করুন। লেখার সময় তাড়াহুড়া এড়িয়ে চলুন। সঠিক নিয়মে কলম ধরার চেষ্টা করুন।
মোটর দক্ষতা: (Motor Skill)
মোটর দক্ষতা (Motor Skill) হলো, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পরিচালনা করার ক্ষমতা। অনেক সময় দেখা যায় শিশুর মোটর দক্ষতা পরিপূর্ণভাবে বিকাশ লাভ করে না, যার কারণে লেখা খারাপ হয়। স্নায়ুতন্ত্র, মস্তিষ্ক এবং পেশী- এই তিনের সঠিক সমন্বয়ে মোটর দক্ষতা পরিপূর্ণতা লাভ করে। কাপড় ভাঁজ করা, কাগজ কাটা, চামচ ব্যবহারের মত সহজ কাজগুলো শিশুর মোটর দক্ষতা বিকাশে ভূমিকা রাখে।
মোটকথা, হাত পরিচালনা করতে হয় এমন যে কোন কাজই সুন্দর হাতের লেখা গড়তে প্রভাব রাখে। আর এর জন্য মোটর দক্ষতাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল। কেননা এর মাধ্যমে লেখার যে কোন উপাদান (যেমন: পেন্সিল) ধরা এবং হাত দিয়ে তা পরিচালনা করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায় যা বর্ণ লিখতে সাহায্য করে। পাজল মিলানো, আঁকিবুকি করা, বিভিন্ন ইনডোর ও আউটডোর খেলাধুলাও এক্ষেত্রে সাহায্য করে।
বুঝতে হবে শিশুর মনস্তত্ত্ব, সৃষ্টি করতে হবে উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ
বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে একটি সুন্দর পরিবেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শেখার একটি উৎসাহমূলক পরিবেশ থাকলে তারা ভুল করতেও দ্বিধান্বিত হয় না বরং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও দ্বিগুণ উৎসাহে এগোতে থাকে। লেখার ক্ষেত্রেও এরকম একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ভুল হলে, লেখা খারাপ হলে বা লেখা দ্রুত না হলে অযথা বকাঝকা না করে উৎসাহ দিতে হবে। এতে শিশু মনে সাহস পাবে আর খুব দ্রুত শিখেও ফেলবে।
লেখা সুন্দর না হওয়ার অন্তর্নিহিত অন্যান্য কারণও থাকতে পারে। মনোযোগহীনতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব ইত্যাদির কারণে শিশুর লেখা খারাপ হতে পারে। এক্ষেত্রে সেই সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করার ব্যবস্থা করাটাই হাতের লেখা সুন্দর করার উপায়। কোনোভাবেই শিশুকে অবমাননা করা যাবে না।
আজকে আমরা চেষ্টা করলাম লেখা সুন্দর করার কয়েকটি কার্যকরী এবং গুরুত্বপূর্ণ কৌশল সম্পর্কে। তো আপনারা যদি এই কৌশলগুলো নির্দিষ্ট সময়ে এবং প্রতিনিয়ত চেষ্টা করতে থাকেন আমরা আশা করি আপনার লেখা প্রতিনিয়ত উন্নতির দিকে যাবে। আপনারা একদিন ঠিকই আপনার লেখাগুলো কে সুন্দর করে তুলতে পারবেন এবং আমরা উপরে যে লেখা সুন্দর করার কৌশল গুলো বললাম এগুলো মেনে চলতে হবে আপনাকে।