যোহরের নামাজ কয় রাকাত

যোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কিভাবে পড়তে হয় – ইসলামিক পোস্ট

যোহরের নামাজ কয় রাকাত এবং কিভাবে পড়তে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। নামাজ ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ এবং গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। নামাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি, নৈকট্য ও পরকালীন সফলতার মাধ্যম। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। এ কারণেই প্রতিটি মুমিন দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন। ইতিপূর্বে ফজরের নামাজ আদায়ের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

যোহরের নামাজ কয় রাকাত এবং যোহরের নামাজ আদায় করার নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনুল কারীমে বলেন:

اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ

অর্থাৎ, নিশ্চয়ই নামায মানুষকে অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। (সূরা: আনকাবূত, আয়াত-৪৫)
সুতরাং এর থেকে নামাজের গুরুত্ব এবং ফযিলত বুঝে আসে।

যোহরের নামাজ কয় রাকাত
যোহরের নামাজ

যোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি

যোহরের ফজর নামাজ চার রাকাত। যোহরের ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত এবং পরে দুই রাকাত আদায় করতে হয়। যদি কোনো কারণবশতঃ যোহরের ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত আদায় করতে কেউ সক্ষম না হয়। তাহলে ফরজের পর প্রথমে চার রাকাত সুন্নত এবং এরপর দুই রাকাত আদায় করে নিতে হয়। প্রাপ্ত বয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন পুরুষের জন্য শুক্রবারে যোহরের পরিবর্তে জুমার নামাজ আদায় করা ফরজ। শুক্রবারে জুমার পূর্বে চার রাকাত এবং জুমার পরে চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করতে হয়।

জোহরের নামাজের সময়

দ্বিপ্রহরের পর থেকে জোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়। বস্তুর ছায়া মূল ছায়া থেকে দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত জোহরের ওয়াক্ত বাকি থাকে। যখন ঘড়ি আবিষ্কৃত হয়নি, তখন যোহরের ওয়াক্ত এভাবেই নির্ধারণ করা হতো। এখন অঞ্চল ভিত্তিক নামাজের সময়সূচীর স্থায়ী ক্যালেন্ডার পাওয়া যায়। এ কারণে নামাজের শুরুর এবং শেষের সময় নির্ণয় করাটা আগের তুলনায় সহজ হয়েছে।

জোহরের নামাজের নিয়ম

জোহরের সুন্নত এবং ফজর নামাজ একই নিয়মে আদায় করতে হয়। পার্থক্য কেবল নিয়তের মাঝে। পাক পবিত্র অবস্থায় জায়নামাজে কেবলামুখী দাড়িয়ে নিয়ত করতে হয়। যদি জোহরের পূর্বের চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে। তাহলে সুন্নতের নিয়ত করবে এভাবে যে, আমি আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির জন্য জোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত করছি। যদি জোহরের ফরজ নামাজ আদায় করে। তাহলে ফরজ নামাজের নিয়ত করবে এভাবে যে, আমি আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির জন্য জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ এই ইমামের পিছনে আদায় করার নিয়ত করছি। আর যদি জোহরের ফরজ নামাজ পরবর্তী দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে। তাহলে সুন্নতের নিয়ত করবে এভাবে যে, আমি আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির জন্য জোহরের পরবর্তী দুই রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত করছি।

এরপর আল্লাহু আকবর বলে পুরুষগণ নাভির নিচে আর মহিলাগণ বুকের উপরে হাত বাঁধবে এবং ছানা পাঠ করবে:
ছানার বাংলা উচ্চারণ: : “সুবহানাকাল্লহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তা’আলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।”

ছানা পড়ার পর পূর্ণ সূরা ফাহিতা পাড়বে এবং সূরা ফাহেতার সাথে অন্য সূরা মিলাবে। ইমামের পিছনে মুক্তাদি সূরা ফাতেহা বা অন্য কোনো সূরা পাঠ করবে না। অতঃপর তাকবীর বলে রুকুতে যাবে। রুকুতে গিয়ে ”সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম” দোয়াটি তিন বার বা বিজোড় সংখ্যায় পাঠ করবে। এরপর سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ (সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ) বলে রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে এবং رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ (রব্বানা লাকাল হামদ) পাঠ করবে। যদি একাকী নামাজ আদায় করে তাহলে উভয়টি পড়বে। আজ যদি ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করে তাহলে শুধু رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ পাঠ করবে।

ভিজিট করুন: আলকাউসার.কম

এরপর “আল্লাহু আকবর” বলে সেজদা পড়বে। সেজদায় “সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা” এই দোয়াটি তিন বার বা বিজোড় সংখ্যায় পাঠ করবে। এরপর সেজদা থেকে উঠে বসবে। এরপর পুনরায় দ্বিতীয়বার সিজদাহ করবে। দুই সিজদার মাঝে এক তাসবীহ পাঠের সময় পরিমাণ বসবে। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ করে দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবে। দ্বিতীয় রাকাত প্রথম রাকাতের মতই আদায় করবে। দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদার পরে বসবে। বসার পর আত্তাহিয়াতু পাঠ করবে । আত্তাহিয়াতু পাঠ করার পর বিলম্ব না করে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবে।

অত:পর তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাত, প্রথম রাকাতের ন্যায় আদায় করবে। ফরজ নামাজের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা পাঠ করবে না। সুন্নত নামাজের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাবে। চতুর্থ রাকাতের দ্বিতীয় সেজদার পরে বসে আত্তাহিয়াতু, দরুদ শরীফ এবং দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করবে। এরপর প্রথমে ডামে এরপর বামে সালাম ফিরাবে। জোহরের পরবর্তী দুই রাকাত সুন্নত নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদার পরে বসে আত্তাহিয়াতু, দরুদ শরীফ এবং দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করে সালাম ফিরাবে।

আশা করি, উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা যোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কিভাবে পড়তে হয়। তা বুঝতে পেরেছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *