মাগরিবের নামাজ কত রাকাত-ইসলামী শরীয়ত মুতাবেক নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং পরকালীন মুক্তি লাভের আশা করা যায়। কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম বান্দার থেকে নামাজের হিসেব নেওয়া হবে। ইতিপূর্বে ফজর, জোহর ও আছরের নামাজের সময়সূচী নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকে মাগরিবের নামাজ আদায়ের নিয়ত এবং মাগরিবের নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ্!
মাগরিবের নামাজের ওয়াক্ত শুরু ও শেষ
মাগরিবের ফজর নামাজ ৩ রাকাত। ফজরের পর আরো দুই রাকাত সুন্নত আদায় করতে হয়। এই মোট পাঁচ রাকাত নামাজ মাগরিবের ওয়াক্তে আদায় করতে হয়। মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হয় সূর্যাস্তের মাধ্যমে।
আরো পড়ুন: ফজরের নামাজ কয় রাকাত ও কিভাবে পড়তে হয়
মাগরিবের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
মাগরিবের ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ম
কিবলামুখী হয়ে দাড়িয়ে মাগরিবের ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ত করতে হয়। নিয়ত আরবিতে করা আবশ্যক নয়। বাংলাতে নিয়ত করলেও হয়ে যাবে। যদি ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করে তাহলে এভাবে নিয়ত করবে: আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির জন্য আমি এই ইমামের পিছনে ৩ রাকাত মাগরিবের ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ত করছি। আর যদি একাকী নামাজ আদায় করে তাহলে এভাবে নিয়ত করবে: আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির জন্য আমি ৩ রাকাত মাগরিবের ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ত করছি।
নিয়ত করার পর তাকবীর তথা আল্লাহু আকবর বলে পুরুষগণ নাভির নিচে আর মহিলাগণ বুকে হাত বাঁধে। প্রথমে সূরা ফাতেহা এরপর সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাবে। ইমামের পিছনে মুক্তাদিগণ কিরাত পড়বে না। বরং ইমামের কিরাত শ্রবণ করবেন। এরপর আল্লাহু আকবর বলে রুকুতে যাবে।
আরো পড়ুন: আছরের নামাজ কত রাকাত ও কিভাবে পড়তে হয়
রুকুতে গিয়ে ”সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম” দোয়াটি তিন বার বা বিজোড় সংখ্যায় পাঠ করবে। এরপর “সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলে রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে এবং ”রব্বানা লাকাল হামদ” পাঠ করবে। যদি একাকী নামাজ আদায় করে তাহলে উভয়টি পড়বে। আজ যদি ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করে তাহলে শুধু رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ পাঠ করবে। এরপর “আল্লাহু আকবর” বলে সেজদা দিবে। প্রতি রাকাত নামাজে দুটি করে সেজদা করতে হয়। প্রতিটি সেজদায় “সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা” দোয়াটি বিজোড় সংখ্যায় পাঠ করতে হয়। উভয় সেজদার মাঝে সোজা হয়ে বসতে হয়। এভাবে প্রথম রাকাত আদায় করবে।
দ্বিতীয় রাকাতও প্রথম রাকাতের অনুরূপ আদায় করবে। দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদার পর বসে আত্তাহিয়াতু পাঠ করতে হয়। আত্তাহিয়াতু পাঠ করার পর তৃতীয় রাকাতের জন্য আল্লাহু আকবার বলে উঠে দাড়াতে হয়। তৃতীয় রাকাতে কেবল সূরা ফাহেতা পাঠ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবে। পূর্বেই নিয়মেই রুকুতে গিয়ে ”সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম” দোয়াটি তিন বার বা বিজোড় সংখ্যায় পাঠ করবে। এরপর “সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলে রুকু থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে এবং ”রব্বানা লাকাল হামদ” পাঠ করবে।
এরপর “আল্লাহু আকবর” বলে সেজদা দিবে। প্রতি রাকাত নামাজে দুটি করে সেজদা করতে হয়। প্রতিটি সেজদায় “সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা” দোয়াটি বিজোড় সংখ্যায় পাঠ করতে হয়। উভয় সেজদার মাঝে সোজা হয়ে বসতে হয়। দ্বিতীয় সেজদার পর আখেরী বৈঠকে বসে আত্তাহিয়াতু, দরুদ শরীফ এবং দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করতে হয়। এরপর সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করবে। সালাম ফিরানোর ক্ষেত্রে প্রথমে ডানে এরপর বাম দিকে সালাম ফিরাবে। এভাবেই মাগরিবের ফরজ নামাজ আদায় করতে হয়।
মাগরিবের সুন্নত নামাজ আদায়ের নিয়ম
উপরোল্লিখিত পদ্ধতিতে মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করবে। মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত এভাবে করবে: আল্লাহ তা’য়ালার সন্তুষ্টির জন্য আমি দুই রাকাত মাগরিবের সুন্নত নামাজ আদায়ের নিয়ত করছি। দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদার পর আখেরী বৈঠকে বসে আত্তাহিয়াতু, দরুদ শরীফ এবং দোয়ায়ে মাছুরা পাঠ করবে। এরপর সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করবে।
শেষ কথা,, আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে থাকি আপনাদের মাঝে নতুন নতুন আর্টিকেল উপস্থাপন করার। মাগরিবের নামাজ কত রাকাত সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি কারো ব্যক্তিগত মতামত থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এছাড়াত্ত আমার যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব আমার ভুলগুলি সংশোধন করে আপনাদেরকে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করার। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।